ব্যথা কি?
ব্যথা হল একটি অপ্রীতিকর শারীরিক চেতনা বা মানসিক অনুভূতি যা যেকোনও অবস্থায় এবং যে কোন স্থানে উদ্ভূত হতে পারে। ব্যথার উপলব্ধি বিষয়ভিত্তিক এবং বিভিন্ন মানুষের ক্ষেত্রে ইহা ভিন্ন হয়। শারীরিক ব্যথা সামান্য নিস্তেজ ব্যথা থেকে শুরু করে কম্পনযুক্ত মারাত্মক যন্ত্রণা পর্যন্ত হতে পারে আর তা তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। আপনি ঘন ঘন ব্যথা অনুভব করতে পারেন অথবা সাময়িকভাবে তা অনুভব করতে পারেন।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
ব্যথা নিজের থেকেই কতকগুলি অবস্থার উপসর্গ। ব্যথার সাথে মূলত যেসব উপসর্গগুলি জড়িত থাকে সেগুলি হল:
- অস্থিরতা।
- অধীরতা।
- নিস্তেজ বেদনা।
- কম্পিত এবং স্পন্দিত অনুভূতি।
- পেশীতে টান ধরা।
- সাধারণ কাজকর্ম করতে না পারা।
- মনোযোগের অভাব ঘটা।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
নিম্নলিখিত অবস্থাগুলির কারণে আপনি ব্যথা অনুভব করতে পারেন:
- টিস্যু বা শরীরকলায় আঘাত বা ক্ষতিসাধন।
- সোম্যাটোসেন্সরি স্নায়ুর ক্ষতি বা স্নায়ুর রোগ।
- সংক্রমণ।
- হাড়ে ফাটল ধরা।
- মাসিকচক্র।
- গর্ভাবস্থা।
- দাঁতের ক্ষয়।
এটি কিভাবে নির্ণয় করা হয় এবং এর চিকিৎসা কি?
ব্যথা শরীরের যেকোনো অঙ্গে উদ্ভূত হতে পারে। গুরুতর ব্যথা হলে অবিলম্বে তা নির্ণয় এবং তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। রোগীর সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য জেনে বোঝা যায় নিম্নলিখিত কোন পরীক্ষাগুলি করার প্রয়োজন হতে পারে:
- শারীরিক পরীক্ষা।
- রক্ত পরীক্ষা।
- এক্স-রে।
- আল্ট্রাসাউন্ড ইমেজিং।
- ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং (এমআরআই)।
- ইলেক্ট্রোমায়োগ্রাফি (পেশীর সক্রিয়তা পরীক্ষা করতে ব্যবহৃত হয়)।
ব্যথার পরিমাপ এর মধ্যে কোন একটি স্কেলে করা হয়: ভিজ্যুয়াল অ্যানালগ স্কেল ফর পেইন (ভিএএস পেইন), নিউমেরিক রেটিং স্কেল অফ পেইন (এনআরএস পেইন), ক্রনিক পেইন গ্রেড স্কেল (সিপিজিএস), শর্ট ফর্ম-36 বডিলি পেইন স্কেল (এসএফ-36 বিপিএস), বা মেজার অফ ইন্টারমিটেন্ট অ্যান্ড কন্সট্যান্ট অস্টিওআর্থারাইটিস পেইন (আইসিওএপি)। নীচে ব্যথার চিকিৎসা সম্পর্কে আলোচনা করা হল:
- ওষুধ:
- ক্যান্সারের ব্যথা এবং অত্যন্ত অসুস্থ রোগীদের জন্য আফিমজাত বেদনানাশক।
- নন-স্টেরইডাল প্রদাহ উপশমকারী ওষুধ। (এনএসএআইডিএস)।
- পেশী শিথিলকরণ ওষুধ।
- ঘুমের ওষুধ।
- ফিজিওথেরাপি।
- শরীর প্রসারিত করার ব্যায়াম।
- আকুপাংচার।
- যোগব্যায়াম।
- গরম ও ঠান্ডা সেঁক।
- ভেষজ ওষুধ।
- হোমিওপ্যাথি।
ব্যথা কমানোর জন্য এক বা একাধিক ধরণের চিকিৎসা করা যেতে পারে। সুস্থ জীবনযাপন, কাজ করার সময় সঠিক দেহভঙ্গি, আর ব্যথার অন্তর্নিহিত কারণের জন্য প্রদত্ত ওষুধের সঙ্গে নিয়মিত যোগব্যয়াম আর ধ্যান করলে ব্যথা প্রতিকারে ভালো ফল পাওয়া যায়।