নেফ্রোটিক সিন্ড্রোম কি?
নেফ্রোটিক সিন্ড্রোম এমন এক অবস্থা, যেখানে কিডনি তার কাজকর্ম ঠিকমতো করতে পারে না, যেমনটা করা উচিত। মূত্রে অ্যাল্বুমিন নামক প্রোটিনের নির্গমনের দ্বারা একে চিহ্নিত করা হয়। এই প্রোটিন শরীর থেকে অতিরিক্ত তরল শোষণ করে রক্তে পাঠানোর জন্য দায়ী। এই প্রোটিন বেরিয়ে যাওয়ার ফলে শরীরে জল জমে, যা থেকে ওডেমা হয়। প্রাপ্তবয়ষ্ক এবং বাচ্চা, উভয়ের মধ্য়েই নেফ্রোটিক সিন্ড্রোম দেখা যায়।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
নেফ্রোটিক সিন্ড্রোমে নিম্নলিখিত লক্ষণ ও উপসর্গগুলি দেখা যায়:
- প্রস্রাবে প্রোটিনের অত্যধিক মাত্রা (প্রোটিনিউরিয়া)।
- রক্তে প্রোটিনের মাত্রা হ্রাস (হাইপোঅ্যালবুমিনেমিয়া)।
- রক্তে ফ্যাট এবং কোলেস্টেরলের উচ্চ মাত্রা ( আরও পড়ুন: উচ্চ কোলেস্টেরলের চিকিৎসা)।
- গোড়ালি, পা এবং পায়ের পাতা ফোলা (ওডেমা)।
- খুব কম ক্ষেত্রে হাত এবং মুখ ফোলা।
- ক্লান্তি।
- ওজন বৃদ্ধি।
- খিদে কমা।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
যখন কিডনি ঠিকমতো পরিস্রাবণের কাজ করতে পারে না, তখন নেফ্রোটিক সিন্ড্রোম দেখা দেয়। দু’ধরনের কারণ রয়েছে, যা হল মুখ্য এবং গৌণ
- মুখ্য কারণ: নেফ্রোটিক সিন্ড্রোম এমন কোনও রোগের কারণে হয়, যা সরাসরি কিডনিকে আক্রমণ করে, যেমন - ফোকাল সেগমেন্টাল গ্লোমেরুলোস্ক্লেরোসিস এবং মিনিমাল চেঞ্জ ডিজিজ।
- গৌণ কারণ: এক্ষেত্রে নেফ্রোটিস সিন্ড্রোম এমন কোনও রোগের কারণে হয়, যা কিডনির সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরকে আক্রমণ করে, যেমন - ডায়াবেটিস, এইচআইভি সংক্রমণ এবং ক্যান্সার।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
ওডেমার উপস্থিতি নির্ধারণের জন্য চিকিৎসক শারীরিক পরীক্ষা করবেন। নেফ্রোটিক সিন্ড্রোম নির্ণয়ের জন্য প্রস্তাবিত পরীক্ষাগুলি নিম্নলিখিত:
- মূত্রে প্রোটিনের উপস্থিতি নির্ধারণ করতে ডিপস্টিক টেস্ট।
- প্রোটিন এবং লিপিডের মাত্রা নির্ধারণে রক্ত পরীক্ষা।
- কিডনির বায়োপসি।
- আল্ট্রাসোনোগ্রাফি।
- কিডনির সিটি স্ক্যান।
যদিও নেফ্রোটিক সিন্ড্রোমের কোনও প্রতিকার নেই, উপসর্গের পরিচালনা কিডনিকে আরও ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। যদি কিডনি সম্পূর্ণরূপে কাজ করা বন্ধ করে দেয়, তাহলে কিডনি প্রতিস্থাপন বা ডায়ালিসিস বিকল্প। আপনার চিকিৎসক হয়ত কিছু ওষুধের পরামর্শ দিতে পারেন
- রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ।
- অতিরিক্ত জল বের করে ওডেমা কমানো।
- রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিহত করা, যা থেকে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হতে পারে।
লবণ খাওয়ার মাত্রা হ্রাস এবং ফ্যাটের মাত্রা কমিয়ে আপনার খাদ্যাভাসের যথাযথ পরিচালনা নেফ্রোটিক সিন্ড্রোমের ব্যবস্থাপনায় সহায়ক হতে পারে।