মাইকোসিস ফাংগয়েডিস কি?
মাইকোসিস ফাংগয়েডিস শ্বেত রক্ত কণিকার দ্বারা ঘটিত এক একধরণের ব্লাড ক্যান্সার বা রক্তের ক্যান্সার। ভারতে এটি সবচেয়ে সাধারণ ধরণের নন-হজকিন লিম্ফোমা। মাইকোসিস ফাংগয়েডিস প্রধানত ত্বককে আক্রান্ত করে এবং ক্ষত সৃষ্টি করে। এই রোগ সাধারণত 40 বছরের বেশী বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে দেখা যায়। এছাড়াও শিশু এবং তরুণরাও এতে আক্রান্ত হয়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা গেছে মহিলাদের তুলনায় পুরুষেরাই বেশি এর দ্বারা আক্রান্ত হন।
এই রোগের প্রধান লক্ষন এবং উপসর্গগুলি কি কি?
দেখা যাওয়া সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গগুলি হল ত্বকে ক্ষত সৃষ্টি হওয়া। ত্বকের ক্ষতর ধরণগুলি হল:
- ত্বকে লাল ছোপ পড়া।
- ফুসকুড়ি।
- ত্বকে ফোলা অংশ।
- উত্থিত বা শক্ত হয়ে যাওয়া প্যাচ।
ক্ষত বা আঘাত সাধারণত বুকে, তলপেটে, নিতম্বে, উপরের ঊরুতে এবং স্তনের ভাগে দেখা যায়, এবং অস্বস্তি ও ব্যথার সৃষ্টি করে। ত্বকের এই ক্ষতগুলি অন্যান্য চর্মরোগ যেমন একজিমা এবং সোরিয়াসিসের অনুরূপ।
পরবর্তী পর্যায়ে এই রোগ, দুর্বলতা, জ্বর, ওজন হ্রাস, অন্ত্রে আলসার বা ঘা, চোখে ব্যথা এবং অস্পষ্ট দৃষ্টির মতন উপসর্গগুলি ঘটতে পারে।
এই রোগের প্রধান কারণগুলি কি কি?
মাইকোসিস ফাংগয়েডিসের সঠিক কারণ এখনও পর্যন্ত পরিষ্কার নয়। এই রোগে, টি-কোষগুলি, এক ধরণের শ্বেত রক্তকণিকা, ক্যান্সারযুক্ত হয়ে ওঠে এবং ত্বককে আক্রান্ত করে। যদিও ত্বক এক্ষেত্রে জড়িত থাকে, তবুও ত্বকের কোষগুলি ক্যান্সারযুক্ত হয়ে ওঠে না। সাধারণত সংক্রামিত ব্যক্তির মধ্যে কিছু জিনগত অস্বাভাবিকতা দেখা যায়।
গবেষকদের দ্বারা উল্লেখিত অন্যান্য কারণগুলি হল:
- ক্ষতিকারক (কার্সিনোজেনিক) পদার্থের সংস্পর্শে আসা।
- ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস সংক্রমণ।
এই রোগ কিভাবে নির্ণয় হয় এবং এর চিকিৎসা কি?
আপনার চিকিৎসক (ত্বক বিশেষজ্ঞ) আপনার ত্বকের সম্পূর্ণ পরীক্ষা করবেন এবং রক্ত কোষের অস্বাভাবিকতা শনাক্ত করার জন্য রক্ত পরীক্ষা করবেন। চিকিৎসক বায়োপসি করতে বলতে পারেন, এটি একটি পদ্ধতি যাতে রোগ নির্ণয় করার জন্য ক্ষত থেকে কোষ নিয়ে তার পরীক্ষা করা হয়। মাইকোসিস ফাংগয়েডিস নির্ণয় করার জন্য বায়োপসির জন্য কোষগুলি পরীক্ষায় পাঠানো হয়। বায়োপসির দ্বারা প্রাপ্ত ফলাফলগুলি নিশ্চিত করার জন্য চিকিৎসক কখনও কখনও প্রোটিন পরীক্ষার পরামর্শ দিতে পারেন। যখন অন্যান্য পরীক্ষার ফলাফল নির্ণয়টিকে নিশ্চিত করে না, তখন জিনের বৈচিত্র সনাক্ত করার জন্য জিন পরীক্ষার সাহায্য নেওয়া হয়।
আপনার রোগের পর্যায় অনুযায়ী, আপনার চিকিৎসক কর্টিকোস্টেরয়েড, আল্ট্রাভায়োলেট চিকিৎসা, ফটোকেমোথেরাপি এবং অন্যান্য ওষুধের পরামর্শ দেবেন।