সারাংশ
এইচআইভি বলতে বোঝায় হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস, যা এইডস (এআইডিএস) অর্থাৎ অ্যাকোয়্যার্ড ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি সিন্ড্রোম রোগের কারণ ঘটায়। ভাইরাস বা জীবাণুটি সাধারণতঃ শারীরিক তরল পদার্থের পরস্পর আদানপ্রদানের মাধ্যমে যৌনসংসর্গবাহিত হয়ে, সংক্রামিত সূঁচের মাধ্যমে রক্তের সাহায্যে অথবা একজন সংক্রামিত গর্ভবতী মায়ের থেকে তাঁর বাচ্চাতে সঞ্চারিত হয়। ভাইরাসটা (জীবাণু) শরীরের রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থাকে বাধা দেয়, শরীরের মূল প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে বিকল করে এবং ব্যক্তিটিকে অন্যান্য সংক্রমণ এবং রোগব্যাধির প্রতি প্রবণ করে তোলে। ভাইরাসটির দুটো ধরণ আছে, এইচআইভি-1 এবং এইচআইভি-2। রোগটা একটা গুরুতর কিন্তু অল্পকালস্থায়ী থেকে ক্রনিক বা দীর্ঘকালস্থায়ী পর্যায়ে এগোয় এবং শেষে এইডস-এর দিকে চলে যায় যেখানে জীবনের সম্ভাবনা কমে যায়। উপসর্গগুলি স্টেজ (পর্যায়) 1-এ ফ্লু-এর মত একটা অবস্থা থেকে স্টেজ 2-তে কমে যাওয়া উপসর্গ পর্যন্ত এবং স্টেজ 3-তে ক্যান্সার এবং অঙ্গ বিকলতার মত বিভিন্ন ধরণের আরও গুরুতর সমস্যাগুলি হয়। যাঁরা ওষুধের অপব্যবহার করেন, অরক্ষিত যৌনসংসর্গ করেন এবং (যাঁদের) লিঙ্গের আগা ছেদন করা নেই, তাঁরা এইচআইভি আক্রান্ত হওয়ার বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন।
রক্ত পরীক্ষা এবং কিছু ঘরোয়া পরীক্ষা অবস্থা নির্ণয় করতে সাহায্য করে, কিন্তু সেগুলি অবশ্যই ওয়েস্টার্ন ব্লট পরীক্ষার দ্বারা ফলাফল নিশ্চিত করার জন্য অনুসরণ করতে হবে। এইচআইভি/এইডস-এর কোন নিরাময় নেই, কিন্তু অ্যান্টিরেট্রোভাইর্যাল থেরাপির (এআরটি) সাহায্যে বহুল পরিমাণে সামলানো যেতে পারে। এইচআইভি-র বেশির ভাগ ওষুধ হল নিরোধক, যেগুলি বিশেষ কিছু প্রোটিন যা ভাইরাসটাকে সংখ্যাবৃদ্ধি করতে সাহায্য করে তার গঠনে বাধা দেয়, যেক্ষেত্রে অন্যান্যগুলি CD4 কোষ নামে কথিত নির্দিষ্ট প্রতিরোধক কোষগুলি যার মাধ্যমে ভাইরাসটা শরীরের মূল কাঠামোকে আক্রান্ত করতে পারে সেখানে প্রবেশ করতে ভাইরাসটাকে বাধা দেয়। খাদ্যতালিকায় কিছু অদলবদল এবং চিকিৎসার সুবিধা পেতে এবং মানসিক আর শারীরিক ধকলের সাথে মোকাবিলা করার জন্য পরিবারের থেকে সাহায্য অবস্থাটা ভালোভাবে সামলাতে সাহায্য করে। চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াসহ কয়েকটি জটিলতা হতে পারে, আনুষঙ্গিক অসুখগুলি, যা একটা দুর্বল হওয়া প্রতিরোধক ব্যবস্থা এবং ক্যান্সারের কারণে মাথা চাড়া দিতে পারে, এবং স্টেজ 3-তে থাকা ব্যক্তিদের যেগুলি আক্রমণ করতে পারে। সঠিক সময়ে যদি চিকিৎসা হয়, এইচআইভি থাকা ব্যক্তিরা 50 বৎসর পর্যন্ত সংক্রমণসহ একটা সক্রিয় জীবনযাপন করতে পারেন, যেক্ষেত্রে যাঁদের এইডস আছে তাঁদের প্রত্যাশিত জীবনের মেয়াদ 10 বৎসর পর্যন্ত থাকে।