চোখের রোগ কি?
চোখের বিভিন্ন অংশের সাথে যুক্ত সমস্যাকে একত্রে চোখের রোগ বলে। চোখের কিছু সাধারণ রোগগুলি হল চোখের শুষ্কতা, কনজাংটিভাইটিস, গ্লূকোমা, ম্যাকুলার ডিজেনারেশন, ডায়বেটিক রেটিনার ক্ষয়, ছানি, দৃষ্টি শক্তির দুর্বলতা, ট্যারা চোখ, অলস চোখ এবং দৃষ্টিশক্তি চলে যাওয়া।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
চোখের রোগতে আক্রান্ত কিনা নিম্নলিখিত লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি দেখে বোঝা যায়:
- লাল এবং ফোলা চোখ।
- চোখে চুলকানি এবং চোখ দিয়ে জল বের হওয়া।
- চোখ করকর করা এবং অস্বস্তি।
- দুর্বল দৃষ্টিশক্তি।
- চোখের মধ্যে এবং চারপাশে ব্যাথা।
- অস্পষ্ট, ঝাপসা এবং দুটো করে দেখা।
- দাগ যুক্ত দৃষ্টির উপস্থিতি যেটা - অস্বাস্তিকর।
- চোখের তারার রঙিন অংশে রঙের পরিবর্তন।
- আলোতে সংবেদনশীলতা।
- দৃষ্টিশক্তি হারানো।
- চোখ বন্ধের সময় পর্দা সংবেদনশীল হওয়া।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
চোখের রোগ বিভিন্ন কারণে হতে পারে। চোখের রোগর প্রধান কারণগুলি নিম্নলিখিত:
- সংক্রমণের কারণগুলি ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, ভাইরাস বা প্যারাসাইটের জন্য হতে পারে।
- চোখে বা চোখের কোন অংশে আঘাত।
- রোগের অবস্থা, যেমন ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন এবং রোগ প্রতিরোধক অবস্থা যেমন রিউমাটয়েড অর্থারাইটিস এবং সজোগ্রেন’স সিনড্রোম।
- চোখের উপর অতিরিক্ত চাপ।
- ভিটামিন A-র অভাব।
- বংশগত জিনের রোগ।
- অ্যালার্জি।
- দীর্ঘদিন ধরে ওষুধের ব্যাবহার।
- বয়স বৃদ্ধি।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
বছরে অন্তত একবার আপনার চোখের পরীক্ষা করানো উচিত। চোখের পরীক্ষা সাহায্য করবে ভিতরের রোগের লক্ষণ এবং উপসর্গ নির্ণয়ে। ওপথ্যামোলজিস্ট (চোখের ডাক্তার) চোখের রোগ নির্ণয় করবেন নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে:
- চোখের পরীক্ষা।
- প্রতিফলন এবং স্নেলেন পরীক্ষা করা হয় দৃষ্টিশক্তির তীক্ষনতার সমস্যার সাথে কাছের এবং দূরের দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করার জন্য।
- দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা।
- গোল্ডম্যানের প্যারিমেট্রি এবং অ্যামসলারের গ্রিড যথাক্রমে শেষের এবং মাঝের দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করবে।
- ফান্ডোস্কোপি চোখের ফান্ডেস (অভ্যন্তরীন ক্ষেত্র) পরীক্ষা করবে।
- টোনোমেট্রি ও ম্যাসকুলার চাপ পরিমাপ করবে।
- ইসিহারা কালার প্লেট পরীক্ষা করবে রঙের অন্ধত্ব।
চোখের রোগর চিকিৎসা নির্ভর করে রোগের অবস্থার উপর। এখানে চোখের চিকিৎসাগুলি বর্তমানে উপলব্ধ রয়েছে:
- চশমার ব্যবহার, কন্টাক্ট লেন্স বা লেজার পদ্ধতির মাধ্যমে দৃষ্টিশক্তির চিকিৎসা।
- অ-মেডিকেটেট চোখের ড্রপ বা চোখের জেল শুকনো চোখকে তৈলাক্ত করে।
- মেডিকেটেট চোখের ড্রপ অ্যালার্জি, গ্লূকোমা এবং চোখের সংক্রমণ সারাতে সাহায্য করে।
- ডায়বেটিক রেটিনোপ্যাথির জন্য লেজার চিকিৎসা।
- ছানি এবং রেটিনার বিচ্যুতিতে অস্ত্রোপাচার প্রয়োজন।
- ম্যাকুলার ডিজেনারেশন নিয়ন্ত্রণ করতে ফটোডায়নামিক থেরাপি।
- শুকনো চোখের চিকিৎসার জন্য ওমেগা- 3 ফ্যাটি অ্যাসিড এবং পুষ্টিকর উপাদান।
জীবনযাত্রার কিছু পরিবর্তন চোখের রোগকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে; পুষ্টিকর খাদ্য এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ, ধূমপান বন্ধ করা, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন, রোদ চশমা ব্যবহারের সাথে চোখকে রক্ষা করুন, কাজের সময় নিরাপত্তা চশমা ব্যবহার করুন এবং চোখকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিন। দীর্ঘস্থায়ী এবং পুনরাবৃত্ত লক্ষণগুলির ক্ষেত্রে, পরামর্শের জন্য ওপথ্যামোলজিস্টের (চোখের ডাক্তার) সাথে যোগাযোগ করুন।