মুখের শুষ্কতা কি?
মুখের শুষ্কতা জেরোস্টমিয়া নামেও পরিচিত, এটি এক এমন অবস্থা যা স্যালাইভা বা থুতুর প্রবাহ কমে যাওয়ার সঙ্গে যুক্ত। এটি খুবই সাধারণ উপসর্গ এবং সচরাচর নানান ওষুধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা যায়।
আপনি যখন ঘাবড়ে যান অথবা মানসিক চাপে থাকেন, তখনও আপনি মুখের শুষ্কতা অনুভব করতে পারেন। এটা আবার বয়স বাড়ার সঙ্গেও সম্পর্কিত। প্রচণ্ডভাবে মুখের শুষ্কতা থেকে কথাবার্তা, চিবানো এবং গিলার সমস্যা হতে পারে। মুখের শুষ্কতা দাঁতের ক্ষয় এবং অন্যান্য সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়, যেমন ওরাল থ্রাশ।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
মুখের শুষ্কতার লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি নিম্নলিখিত:
- কথাবার্তা, চিবানো এবং গিলতে সমস্যা।
- ঘন ঘন জলতেষ্টা অনুভব করা।
- ঠোঁট ফাটা।
- স্বাদের অনুভূতি হ্রাস।
- গলা ব্যথা।
- হেলিটোসিস (নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ)।
- মুখের কোণা শুকিয়ে যাওয়া।
- মুখে ঘন ঘন আলসার হওয়া।
- বাঁধানো দাঁত পরতে অসুবিধে হওয়া।
- মাড়ির সংক্রমণ বৃদ্ধি।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
মুখের শুষ্কতা নানা কারণে হয়:
- পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল গ্রহণ না করা অথবা কিডনির রোগ এবং ডায়াবেটিসের মতো চিকিৎসাজনিত অবস্থার কারণে ডিহাইড্রেশন।
- মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়াও (রাত্রিবেলা) মুখের শুষ্কতার জন্য দায়ী। নাকের পলিপ, টনসিল বৃদ্ধি এবং অ্যালার্জিক রাইনাইটিস মতো অবস্থা মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে বাধ্য করে, যা শুষ্কতার কারণ।
- ডায়াবেটিস কারণে থুতুর প্রবাহ মাত্রা কমে যায়।
- ক্যানসারের চিকিৎসায় রেডিয়েশন থেরাপি।
- ধূমপান।
- অটোইমিউন রোগের ফলেও মুখের শুষ্কতা হতে পারে (জোগ্রেন সিন্ড্রোম)।
- ওষুধ থেকেও হতে পারে।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
এটি নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে নির্ণয় করা যায়:
- সায়ালোমেট্রি - থুতু বা লালার প্রবাহ পরিমাপ করা।
- সায়ালোগ্রাফি - থুতু নালীতে রেডিওপেক ডাই প্রয়োগ।
- অন্যান্য সনাক্তকরণ পদ্ধতি - আলট্রাসাউন্ড, ম্যাগনেটিক রিজোনেন্স ইমেজিং, লালাগ্রন্থির বায়োপসি, ইত্যাদি।
মুখের শুষ্কতা চিকিৎসা করার জন্য কোনও বাধাধরা নিয়মাবলী নেই। তাও, নিম্নলিখিত পদ্ধতির মাধ্যমে আপনি অস্বস্তি দুর করার চেষ্টা করতে পারেন:
- স্যালাইভারি লজেন্স এবং স্যালাইভারি স্প্রে বেশি আরাম পাওয়ার জন্য।
- চুয়িং গাম এবং অর্গ্যানিক অ্যাসিডের মতো লালাগ্রন্থির উদ্দীপক।
- মুখের শুষ্কতা কমানোর জন্য তরল পানের মাত্রা বৃদ্ধি।
- পদ্ধতিগত ওষুধ।
প্রভেদকারী নির্ণয়
- জোগ্রেন সিন্ড্রোম মুখের শুষ্কতা ও শুষ্ক চোখ একটি অবস্থা।
- রেডিয়েশন থেরাপির ফলে মুখের শুকিয়ে উঠতে পারে।
- ঘুমের অভাব, উদ্বিগ্নতা এবং ঘাবড়ানোর মতো শারীরিক অবস্থা সাময়িকভাবে মুখের শুষ্কতার কারণ হতে পারে।
- হরমোনঘটিত অসুখ।