ক্যাম্পাইলোব্যাক্টার ইনফেকশন কি?
ক্যাম্পাইলোব্যাক্টার ইনফেকশন একপ্রকার খাদ্যে বিষক্রিয়াকে বলা হয়। সাধারণতঃ এটি একটি মৃদু সংক্রমণ কিন্তু শিশু, বয়স্ক ও কম রোগ-প্রতিরোধকারী ক্ষমতা যুক্ত মানুষদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণও হতে পারে। যে কোন বয়সের মানুষেরই এই সংক্রমণ হতে পারে. গত দশবছর ধরে সারা বিশ্বজুড়েই এই রোগটির প্রাদুর্ভাব ও আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। যদিও, এই আন্ত্রিকজাতীয় রোগটি নিয়ে গবেষণা ভারতে কমই হয়েছে।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি ?
ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে আসার 2-4 দিনের মধ্যে যে উপসর্গগুলি দেখা যায় তা হল:
- পেটে ব্যথা ও মোচড়
- জ্বর
- বমি বমি ভাব এবং বমি
- পাতলা পায়খানা যদিও এতে রক্ত খুব একটা দেখা যায় না
কিছু ব্যক্তির মধ্যে কোনরকম উপসর্গই দেখা যায় না। জটিলতার মধ্যে একটি হলো ব্যাকটিরিমিয়া (রক্তে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি), যকৃৎ ও অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ।
এই রোগের প্রধান কারণগুলি কি কি?
বেশীরভাগ ক্ষেত্রে, এই সংক্রমণ কম্পাইলোব্যাক্টার প্রজাতির দ্বারা ঘটে। এই জীবাণুগুলি ক্ষুদ্রান্ত্রের ভেতরদিকের দেওয়ালে আক্রমণ করে। এই ব্যাকটেরিয়াগুলি এরপর শরীরের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে ও অন্যান্য অঙ্গেও আক্রমণ করতে পারে। এই সংক্রমণের উৎস কাঁচা অসিদ্ধ মাংস ও পোলট্রির মাংস, সংক্রামিত খাদ্যদ্রব্য, জল, পাস্তুরাইজ না করা দুধ সেবন এবং সংক্রামিত পশু-পাখির সংস্পর্শে আসা। এটি ট্রাভেলরস ডায়রিয়া বা পেট খারাপ অথবা অন্ত্রের সংক্রমণের একটি অন্যতম কারণ।
এই রোগ কিভাবে নির্ণয় হয় এবং এর চিকিৎসা কি?
রোগ নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসক নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলি করতে বলতে পারেন:
- সম্পূর্ণ রক্ত গণনা (সিবিসি)।
- মলের নমুনা পরীক্ষা শ্বেত রক্তকণিকার (ডাব্লুিউবিসি) উপস্থিতি দেখার জন্য।
- মল পরীক্ষা করে দেখা তাতে ক্যাম্পাইলোব্যাক্টার আছে কিনা।
সাধারণত, এই রোগ নিজের থেকেই ঠিক হয়ে যায়, কিন্তু কিছু আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে। এই রোগের চিকিৎসার উদ্দ্যেশ্য শরীরে জলশূন্যতা এড়িয়ে চলা এবং জীবনের মান উন্নত করা। যদি রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয় তাহলে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের প্রয়োগ করা যেতে পারে। যেহেতু বেশি ওষুধের প্রয়োজন নেই এক্ষেত্রে তাই নিজের যত্ন নেওয়া প্রয়োজনীয়। অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল ওষুধ সেইসব রোগীদের দেওয়া হয় যাদের প্রয়োগমূলক পদ্ধতি/অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।
নিজের যত্ন নেওয়ার উপায়:
- প্রতিদিন 8-10 গ্লাস জল খান।
- যখনই পাতলা পায়খানা হবে তখনই অন্তত এক কাপ করে জলীয় কিছু পান করুন।
- টাটকা বানানো সুসিদ্ধ গরম খাবার খাওয়া উচিত কারণ তা ব্যাকটেরিয়া নষ্ট করে।
- বাইরের খাবার ও কোন জলধারার জল খাবেন না।
- খাওয়ার আগে ভালো করে হাত ধুয়ে নিন।
এই সংক্রমণ সাধারণত মৃদু প্রকারের হয়, কিন্তু চিকিৎসা না করা হলে, বেশি বাড়াবাড়ির পর্যায়েও যেতে পারে। ক্যাম্পাইলোব্যাক্টার সংক্রমণ সঠিকভাবে সেবা দ্বারা ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে চিকিৎসা করা যেতে পারে।