শিশুর হাঁপানি (অ্যাস্থমা) কি?
অ্যাস্থমা একটি দীর্ঘকালীন অসুখ যাতে কাশি, শ্বাস নেওয়ার সময় বুকে আওয়াজ এবং শ্বাস কষ্ট দেখা যায়। প্রায় অর্ধেক অ্যাস্থমার ঘটনা শিশুদের মধ্যে দেখা যায়। শিশুদের অ্যাস্থমা হবার প্রবনতা বেশী হয় তাদের সঙ্কীর্ণ শ্বাসনালীর জন্য, যেটা বয়স্কদের তুলনায়, শিশুদের অ্যাস্থমা আরো বিপদজনক করে তোলে। এইজন্য, শিশুদের অ্যাস্থমা নির্ণয় করা এবং তার চিকিৎসা করা খুবই গুরুত্বপূর্ন। অনেক শিশু তাদের কৈশোর অবস্থায় পৌঁছালে অ্যাস্থমা থেকে মুক্তি পায়।
এর প্রধান লক্ষন ও উপসর্গগুলি কি কি?
অ্যাস্থমার উপসর্গ শিশুদের মধ্যে খুব কম বয়সেই দেখা যায়, এমনকি প্রায়ই তারা পাঁচ বছরের হওয়ার আগেই। যখন উপসর্গগুলি প্রকটভাবে দেখা যায়, এটা বুঝতে অসুবিধা হতে পারে যে এটি প্রকৃতই অ্যাস্থমা। বিভিন্ন শিশুর অ্যাস্থমার উপসর্গ বিভিন্ন হতে পারে, তাদের মধ্যে সাধারণ উপসর্গগুলি হলো:
- দীর্ঘকালীন কাশি
- শ্বাস নেওয়ার সময় বুকে আওয়াজ
- ঘন ঘন ঠান্ডা লাগা
- বুকে সংকোচন ঘটা, ফলস্বরূপ শ্বাসকষ্ট বা ঘন ঘন শ্বাসগ্রহন
এর মূল কারণগুলি কি কি?
অ্যাস্থমার মূল কারণগুলি হল:
- বিভিন্ন প্রকার অ্যালার্জি, যেমন, পশুদের লোম, ধুলো, রেনু ও গুঁড়ো মাটি
- ব্যায়ামচর্চা এবং উচ্চতায় আরোহণ
- ঠান্ডা আবহাওয়া এবং/বা আবহাওয়ার পরিবর্তন
- সংক্রমণ যেমন ঠান্ডা লাগা এবং ফ্লু
- দুষণকারী এবং অস্বস্তিকারক পদার্থ যেমন ধোঁয়া
উপসর্গগুলি সাধারনত ভোরবেলায় বা গভীর রাতে প্রকট হয়।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
চিকিৎসক বিস্তারিত চিকিৎসাগত ইতিহাস, জন্মের সময় শ্বাসকষ্ট হয়েছে কিনা ও পরিবারে কারোর অ্যাস্থমা আছে কিনা জানতে চাইবেন। এরপর হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসের পরীক্ষা করা হয়। চিকিৎসকরা ফুসফুসের কার্যকারিতা পরীক্ষার পরামর্শও দিতে পারেন যেটা ফুসফুসের কার্যক্ষমতা এবং কি পরিমান বাতাস গ্রহণ ও ত্যাগ করা হচ্ছে শ্বাসপ্রশ্বাসে তার পরিমাপ করে।
অ্যাস্থমার চিকিৎসা সাধাণত দুই ভাগে বিভক্ত:
- তাৎক্ষনিক আরাম: এটি সেই সকল প্রতিক্রিয়াগুলির তাৎক্ষনিক চিকিৎসা যখন অ্যাস্থমা রোগ আক্রমন করে। চিকিৎসকরা তৎক্ষণাৎ ইনহেলার নিতে বলেন যখনই উপসর্গ দেখা দেয়। যাতে তখনি কাশি এবং শ্বাসকষ্টের থেকে আরাম পাওয়া যায়।
- দীর্ঘকালীন চিকিৎসায় শ্বাসনালীতে প্রদাহ কমাতে ও শ্বাসনালীর প্রতিবন্ধকতা দূর করতে স্টেরয়েড ও বেটা অ্যাগোনিস্টস ওষুধ দেওয়া হয়।
- এছাড়াও, চিকিৎসকরা অ্যালার্জির কারণগুলি থেকে সচেতনভাবে দূরে থাকতে পরামর্শ দেন। কিছু ক্ষেত্রে, অ্যালার্জির ইনজেকশনও দেওয়া হয়।