মৌমাছির কামড় কি?
মৌমাছির কামড়, যার অর্থ একটি মৌমাছির দংশন, প্রচন্ড কষ্টকর হয়ে থাকে। মৌমাছির কামড়ে অন্যান্য পতঙ্গদের কামড়ের তুলনায় বেশী ব্যথা হয় কারণ তাদের শরীরে অ্যাসিডের উপস্থিতি আছে, সে কারণে শরীরে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
যদি একটি মৌমাছির কামড় খাওয়া ব্যক্তির অতীতে মৌমাছির কামড়ে অ্যালার্জি হয়ে থাকে, তাহলে পরের বার মৌমাছির কামড় তার জীবনের জন্য ঝুঁকি সাপেক্ষ হতে পারে।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
একটি মৌমাছির কামড় প্রতিটি ব্যক্তির ক্ষেত্রে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে অথবা একই ব্যক্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে। প্রতিক্রিয়াগুলি বিস্তীর্ণরূপে লঘু, মাঝারি এবং গুরুতর হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়।
- লঘু প্রতিক্রিয়া এক দিনের কম সময়ের মধ্যে সেরে যায়।
- কামড়ানোর জায়গায় জ্বালার ও ব্যথার অনুভূতি
- লালচে ভাব ও সামান্য ফোলাভাব
- মাঝারি প্রতিক্রিয়া সারতে প্রায় এক সপ্তাহ সময় লাগে।
- ফোলাভাব যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়
- লালচে ভাব বেশ কিছুদিন ধরে থাকে
- গুরুতর প্রতিক্রিয়া যাকে অ্যানফাইলাক্টিক প্রতিক্রিয়া বলা হয়ে থাকে তা বেশ মারাত্মক হতে পারে এবং সেটি চিকিৎসাগত জরুরি অবস্থা বলে বিবেচিত হয়ে থাকে, যাতে তাৎক্ষনিক চিকিৎসার প্রয়োজন।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
- যখন একটি মৌমাছি কোন মানুষকে কামড়ায়, তখন মৌমাছির হুল থেকে বিষ ব্যক্তিটির ত্বকে প্রবেশ করে। যার ফলে ব্যথা ও ফোলাভাব দেখা যায়।
- মৌমাছির চাক যদি মানুষের বসতি এলাকার আশেপাশে হয়ে থাকে অথবা মৌমাছি নিয়ে কাজ করেন যেসব ব্যক্তিরা তাদের মৌমাছির কামড় খাওয়ার সম্ভাবনা বেশী।
- যদি একজন ব্যক্তি অতীতে মৌমাছির দ্বারা দংশিত হয়ে থাকে তাহলে দ্বিতীয় বার মৌমাছির কামড়ে তার তীব্র প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
কিভাবে এটি নির্ণয় এবং এর চিকিৎসা করা হয়?
- যদি আপনি মৌমাছির দ্বারা দংশিত হন, তবে কিছু টেস্ট করার পরামর্শ দেওয়া হয় যাতে জানা যায় আপনার মৌমাছির বিষে অ্যালার্জি আছে কিনা। এই টেস্টগুলির মধ্যে আছে:
- কিছু অ্যান্টিবডি যাদেরকে আই জি ই অ্যান্টিবডি বলা হয়ে থাকে তাদের মাত্রা যাচাই করার জন্য রক্ত পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়।
- ত্বকের প্যাচ বা সামান্য অংশ পরীক্ষা, যেখানে অল্প বিষ প্রয়োগ করে দেখা হয় যে কোন প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা।
- যে কামড়ে লঘু প্রতিক্রিয়া হয়, সেক্ষেত্রে, হুলটি শরীর থেকে বার করা দরকার যাতে শরীরে বিষের প্রবেশ কমে এবং তারপর কোন সাময়িকভাবে কার্যকরী স্টেরোয়েড ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। অ্যান্টিহিস্টামাইনও ব্যবহার করা যায়, তার সাথে কোল্ড কমপ্রেস বা ঠান্ডা কিছু চাপা দেওয়া।
- আরও গুরুতর ক্ষেত্রে, অ্যানফাইলাক্সিসের জন্য তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রয়োজন, যার মধ্যে এপিনেফ্রিন ইনজেকশন, অক্সিজেন সরবরাহ এবং শিরায় তরল প্রবেশ ঘটানো দরকার। অ্যানফাইলাক্সিসকে একটি চিকিৎসাগত জরুরী অবস্থা বলে মনে করা হয় এবং এর তাৎক্ষণিক চিকিৎসা করা দরকার।