অ্যাগাম্মাগ্লোবিউলিনেমিয়া কি?
মানব দেহের মধ্যে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা-বর্ধক প্রোটিন থাকে যাদের ইম্মিউনোগ্লোবিউলিন বলা হয়। অ্যাগাম্মাগ্লোবিউলিনেমিয়া হলো শরীরের এমন এক পরিস্থিতি যেখানে কোনো ব্যক্তির শরীরে এই প্রোটিনের ঘাটতি হয় এবং একটি দুর্বল রোগ-প্রতিরোধ তন্ত্র (ইমিউন সিস্টে) তৈরি হয়। যাদের এই পরিস্থিতি তৈরি হয় তাদের সারাজীবন সংক্রমিত হওয়ার বেশি সম্ভাবনা থাকে।
এই রোগের প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গ গুলি কি কি?
ইম্মিউনোগ্লোবিউলিনের ঘাটতি থেকে অ্যাগাম্মাগ্লোবিউলিনেমিয়া হওয়া কোনো ব্যক্তির সংক্রমিত হওয়ার বেশি সম্ভাবনা থাকে এবং সে সাধারণত নিম্নোক্ত রোগগুলিতে বারবার আক্রান্ত হয়:
- হাঁপানি - কোনো পরিচিত কারণ ছাড়া।
- চোখ, ত্বকের ও কানের সংক্রমণ।
- ব্রঙ্কাইটিস - শ্বাসনালীতে ফোলা ভাব।
- পেটের গোলমাল এবং পরিপাক নালীতে সংক্রমণ।
- শ্বাসনালীর উপরের দিকে সংক্রমণ এবং ফুসফুসের সংক্রমণ, যেমন নিউমোনিয়া।
দেখা গেছে যে, জন্মের প্রথম পাঁচ বছরের মধ্যে এটির সংক্রমণ সবথেকে বেশী হয়।
এই রোগের প্রধান কারণগুলি কি কি?
এই অবস্থার প্রধান কারণ হলো জিনগত সমস্যা যা মূলত পুরুষদের মধ্যে দেখা যায়। এই সমস্যার জন্য, রোগ-প্রতিরোধের কোষের বৃদ্ধিতে বাধাপ্রাপ্ত হয়, যা ব্যক্তির মধ্যে সংক্রমণের প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়। যাদের এই সমস্যা আছে তাদের যে শুধু সংক্রমণের ঝুঁকি আছে তা নয়, তারা আগের সংক্রমণ থেকে সম্পূর্ণভাবে সেরে ওঠার আগেই আবার সংক্রমিত হয়। এই সংক্রমণ প্রধানত ফুসফুস, ত্বক, পাকস্থলী ও গাঁটে (জয়েন্ট) হয়ে থাকে। এর জিনগত বা জেনেটিক প্রকৃতির কারণে, পরিবারের অন্য সদস্যদেরও অ্যাগাম্মাগ্লোবিউলিনেমিয়া রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা খুব বেশি।
কিভাবে এই রোগটি নির্ণয় করা এবং চিকিৎসা করা হয়?
এই রোগের উপস্থিতি সম্পর্কে মূলত রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ইম্মিউনোগ্লোবিউলিন এবং বি লিংফোসাইটের মাত্রা দেখে বোঝা যায়।
এই অবস্থায় চিকিৎসা শুরু করার জন্য, চিকিৎসক ইম্মিউনোগ্লোবিউলিনের সাপ্লিমেন্ট ত্বক নিম্নস্থ বা শিরার মধ্যে দিয়ে ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে দিতে পারেন। কিছু কিছু কঠিন ক্ষেত্রে, অস্থিমজ্জার প্রতিস্থাপন (বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট) করতে পরামর্শ দেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা বারবার হওয়া সংক্রমন প্রতিরোধ করার জন্য কড়া অ্যান্টিবায়োটিকের পরামর্শও দেন। সমস্ত চিকিৎসার লক্ষ্য হলো সংক্রমণের হার ও তীব্রতা কমানো।