অ্যাবসেন্স সিজরস - Absence Seizures in Bengali

Dr. Ayush PandeyMBBS,PG Diploma

November 19, 2018

March 06, 2020

অ্যাবসেন্স সিজরস
অ্যাবসেন্স সিজরস

অ্যাবসেন্স সিজর কি?

অ্যাবসেন্স সিজর বলতে হঠাৎ করে জ্ঞান শূন্য হয়ে যাওয়াকে বোঝায়, এটা খুব অল্প সময়ের জন্য হয় এবং এতে স্টেরিং স্পেলস (অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা) হয়।

অ্যাবসেন্স সিজর 15 সেকেন্ডের জন্য স্থায়ী হয়, যার মধ্যে যে লোকটির সিজর হয়েছে সে অসহায়ভাবে আকাশের বা শূন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে (তাই এটাকে স্টেরিং স্পেলস বলা হয়)। অল্প সময়ের এই জ্ঞানশূন্যতার পর মানুষটি হঠাৎ করে তার স্বাভাবিক চেতনা ফিরে পায়।

এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলো কি কি?

অ্যাবসেন্স সিজরের প্রাথমিক উপসর্গ হল শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা। যদিও, এটা অজান্তেই হয়ে থাকে এবং সেই মানুষটি এ ব্যাপারে কিছু জানতেই পারে না। অ্যাবসেন্স সিজরের অন্য উপসর্গগুলি হল:

  • ​চোখের পলক কাঁপা।
  • আঙ্গুল ঘষা।
  • অল্প অল্প হাত নাড়া।
  • বারবার চেবানোর মতো অঙ্গভঙ্গি করা বা ঠোঁট চাটা।
  • 10 থেকে 20 সেকেন্ড ধরে আকাশের বা শূন্যের দিকে তাকিয়ে থাকা।

​সিজরে আক্রান্ত হবার সময়, সে ব্যক্তি যে কাজটা করছিলো সেটা হঠাৎ করে বন্ধ করে দেয়, যেমন:

  • হঠাৎ করে হাঁটা বন্ধ করে কিছু মুহুর্ত পর আবার হাঁটতে থাকা।
  • কিছু বলতে বলতে হঠাৎ করে কথার মাঝখানে থেমে যাওয়া এবং কিছু মুহুর্ত পর আবার বলা শুরু করা।

সিজর অনুভব করার কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যক্তিটি আবার সজাগ হয়ে যায় এবং জানতেই পারে না যে তার সিজর হয়েছিল। সিজর সাধারনত ওই মানুষটাকে কোনোভাবেই বিভ্রান্ত করে না। অ্যাবসেন্স সিজর হওয়ার সময় ব্যক্তির পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে।

কিছু ব্যক্তি দিনে কয়েকবার অ্যাবসেন্স সিজরে আক্রান্ত হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে এটা স্কুলের পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলতে পারে। আসলে এই অ্যাবসেন্স সিজারকে লোকে ডুউইন্ডলিং অ্যাটেনশন (মনোযোগ কমে যাওয়া) বা দিবাস্বপ্নের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলতে পারে।

এটির প্রধান কারণগুলি কি কি?

মস্তিষ্কের একটা অস্বাভাবিক আচরণের ফলে অ্যাবসেন্স সিজর হয়ে থাকে। আমাদের মাথার কোষগুলো ইলেকট্রিক্যাল ইমপালস এবং কেমিক্যাল সিগনালের মাধ্যমে যোগাযোগ করে। অ্যাবসেন্স সিজর হওয়ার সময় ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যালগুলো বারে বারে হতেই থাকে। অ্যাবসেন্স সিজর হবার আরো একটা বংশগত বা জেনেটিক কারণ থাকতে পারে। এই অ্যাবসেন্স সিজর হওয়ার ঝুঁকিকে বাড়িয়ে দেওয়ার আরো কিছু কারণ হল:

  • খিঁচুনির জন্য ঔষধ, যেমন ফেনিটোইন এবং কার্বামাজেপাইন।
  • দ্রুত এবং অগভীর শ্বাস বা হাইপারভেন্টিলেশন
  • ফ্ল্যাশিং লাইট।

শিশুদের এই রোগটি হবার জেনেটিক বা বংশগত প্রবণতা থাকতে পারে। 4-14 বছর বয়সের শিশুদের মধ্যে অ্যাবসেন্স সিজর বেশি প্রভাব বিস্তার করে।

এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?

যেহেতু অ্যাবসেন্স সিজরকে সাধারণভাবে কোন মেডিক্যাল সমস্যা হিসেবে ধরা হয় না, তাই প্রাথমিকভাবে এটা নির্ণয় করতে অনেক দেরি হয়ে যায়। অ্যাবসেন্স সিজর নির্ণয় করার জন্য নিম্নলিখিত টেস্টগুলো করা যেতে পারে:

  • সিজরের অন্যান্য প্যাথোলজিক্যাল কারণ খোঁজার জন্য রক্ত পরীক্ষা করা।
  • মস্তিষ্কের কোন অস্বাভাবিকতা সনাক্ত করতে এমআরআই এবং সিটি স্ক্যান করা।
  • মস্তিষ্কের ইলেকট্রিকেল ক্রিয়াকলাপের পরীক্ষা করার জন্য ইলেক্ট্রোএনসেফালোগ্রাম (ইইজি) করা।

অ্যাবসেন্স সিজরের চিকিৎসায় অ্যান্টি সিজর ওষুধ ব্যবহৃত হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, জীবনযাত্রার পরিবর্তন এই সিজরের সঙ্গে মোকাবিলা করতে সাহায্য করে। যেমন ধরুন, শিশুদের ক্ষেত্রে, শিশুটার অবস্থা সম্পর্কে তার শিক্ষককে জানিয়ে রাখলে সাহায্য পাওয়া যেতে পারে। কিছু বিরল ক্ষেত্রে, সিজরের পুনরাবৃত্তিকে কমানোর জন্য অস্ত্রোপ্রচারের দরকার হতে পারে।



তথ্যসূত্র

  1. MedlinePlus Medical Encyclopedia: US National Library of Medicine; Absence seizure
  2. Johns Hopkins Medicine [Internet]. The Johns Hopkins University, The Johns Hopkins Hospital, and Johns Hopkins Health System; Absence Seizures
  3. Ewa Posner. Absence seizures in children. BMJ Clin Evid. 2008; 2008: 0317. PMID: 19450342
  4. Center for Disease Control and Prevention [internet], Atlanta (GA): US Department of Health and Human Services; Types of Seizures
  5. MedlinePlus Medical Encyclopedia: US National Library of Medicine; Seizures