ব্লাড ক্যান্সার (লিউকেমিয়া) কি?
ব্লাড ক্যান্সার একপ্রকার অসুস্থতা যাতে রক্তকণিকার বিকাশের সমস্যার ফলে শরীরের স্বাভাবিক কার্যকলাপ (রোগ সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ, হোমিওস্টেসিস, ক্ষয়ক্ষতি পূরণ ইত্যাদি) ব্যাহত হয়। এর ফলে বহুসংখ্যক উপসর্গ দেখা দেয়। ব্লাড ক্যান্সারের প্রধান প্রকারগুলি হল মেলোমা, লিউকেমিয়া এবং লিম্ফোমা যেগুলি প্রত্যেকটি ক্যান্সারের দ্বারা ভিন্ন ভিন্ন রক্তকণিকা, যথাক্রমে প্লেটলেট বা অণুচক্রিকা, শ্বেত রক্তকণিকা এবং লিম্ফোসাইটের আক্রান্ত হওয়ার কারণে হয়।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলো কি কি?
বিভিন্ন ব্লাড ক্যান্সারের ক্ষেত্রে উপসর্গ বিভিন্ন হতে পারে, কিন্তু এই সবগুলির মধ্যেই কিছু সাধারণ উপসর্গ দেখতে পাওয়া যায়, সেগুলি হল
- কোন নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া।
- অবসাদ বা অত্যধিক ক্লান্তিবোধ।
- অতিরিক্ত ঘাম হওয়া, বিশেষত রাত্রিবেলায়।
- বারবার সংক্রমণ হওয়া।
- হাড়ে ব্যথা এবং/অথবা সন্ধিতে ব্যথা।
- ত্বকের চুলকানি যা থেকে সহজেই ক্ষত এবং/অথবা রক্তপাত হয়।
- মাথা,ঘাড়, কুচকি বা পেটে ফোলাভাব বা মাংসপিন্ড সৃষ্টি হওয়া।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
ব্লাড ক্যান্সার হয় মূলত ডিএনএ এর পরিবর্তন বা অস্বাভাবিকত্বের ফলে। এই পরিবর্তনের কারণ সঠিকভাবে জানা যায় না, এবং মনে করা হয় পারিবারিক ইতিহাস, বয়স, লিঙ্গ, জাতি বা অন্যান্য স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত অবস্থা এর জন্য দায়ী। কিছু রাসায়নিক ও তেজস্ক্রিয় পদার্থের সংস্পর্শে এলেও এই রোগ হতে পারে।
কিভাবে এটি নির্ণয় করা হয় এবং এর চিকিৎসা কি?
সাধারণত, ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়ে আকস্মিকভাবে যখন অন্য কোন রোগের জন্য রক্তপরীক্ষা করা হয়, অথবা যখন ডাক্তার কিছু উপসর্গের ভিত্তিতে নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলি করার নির্দেশ দেন:
- রক্ত পরীক্ষা।
- পেরিফেরাল ব্লাড ফিল্ম।
- সম্পূর্ণ রক্ত গণনা (এফবিসি)।
- ইনফেকশন স্ক্রিনিং/ ভাইরোলজি টেস্টিং।
- ইউরিয়া ও ইলেক্ট্রোলাইট।
- লিভার ফাংশন টেস্ট।
- ফ্লো সাইটোমেট্রি (ইমিউনফেনোটাইপিং)।
- সাইটোজেনেটিক টেস্টিং।
- অস্থিমজ্জা ও লসিকাগ্রহ্নির বায়োপসি।
- স্ক্যান।
- এক্স-রে।
- আল্ট্রাসাউন্ড।
- কম্পিউটেড টোমোগ্রাফি (সিটি)।
- ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং (এমআরআই)।
ব্লাড ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন স্তরের চিকিৎসা প্রয়োজন
- উচ্চ স্তরের চিকিৎসা - ক্যান্সার কোষগুলির ছড়িয়ে পড়া থামানো বা ধ্বংসের জন্য তীব্রশক্তির ওষুধ ব্যবহৃত হয়, এদের মধ্যে আছে
- উচ্চ অথবা সাধারণ ডোজের কেমোথেরাপি (কম ডোজ ব্যবহৃত হয় রোগের নিম্নস্তরের প্রকোপের চিকিৎসার জন্য)।
- রেডিয়েশন বা অস্ত্রোপচার।
- স্টেম সেল প্রতিস্থাপন।
- এগুলিও ব্যবহার করা হতে পারে (রোগের নিম্নস্তরের প্রকোপের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হতে পারে)
- মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি।
- বায়োলজিক্যাল থেরাপি।
- ইমিউনোথেরাপি।